সফল জীবনের সঙ্গী: বন্ধুত্বের গুরুত্ব ও সঠিক বন্ধুর নির্বাচন

 

সফল জীবনের সঙ্গী

ভূমিকা

জীবনের পথচলায় আমাদের বহু মানুষের সাথে পরিচয় ঘটে এবং তাদের মধ্যে কিছু মানুষ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়, যাদের আমরা বন্ধু বলে ডাকতে পারি। বন্ধুত্বের সম্পর্ক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের মানসিক ও আবেগগত সাপোর্ট দেয়। যদিও সব পরিচয় থেকেই গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে না, তবে কিছু সম্পর্ক আমাদের জীবনে বিশেষ স্থান দখল করে নেয়। তাই বন্ধুত্ব নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।

বন্ধুত্বের গুরুত্ব

আত্মীয় ও বন্ধুর মধ্যে পার্থক্য

জীবনে অনেক সময় আসে যখন আত্মীয়দের চেয়ে বন্ধুরা প্রধান হয়ে দাঁড়ায়। কঠিন সময়ে আত্মীয়দের সাথে বন্ধুরা পাশে থাকে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে। তাই বন্ধুত্বের গুরুত্ব অপরিসীম।

বন্ধুত্বের ভূমিকা

বন্ধুরা আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা আমাদের সুখ-দুঃখের সাথী, বিপদের সময়ের সহায়ক এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের মানসিক সমর্থন দেয়। একজন প্রকৃত বন্ধু আমাদের জীবনকে সুখী এবং সাফল্যময় করতে সাহায্য করে।

বন্ধুত্বের নির্বাচন

বন্ধুত্বের সঠিক নির্বাচন

বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ একজন ভালো বন্ধু যেমন আমাদের জীবনে সাফল্য আনতে পারে, তেমনি খারাপ বন্ধুর সঙ্গ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করতে পারে। বন্ধুত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।

1. সৎ মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন

  • সৎ মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। একজন সৎ বন্ধু আপনার জীবনে একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজ করবে। তারা সবসময় আপনার মঙ্গল চায় এবং আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। তাদের সান্নিধ্যে আপনি সত্য ও ন্যায়ের পথে চলতে পারবেন এবং জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবেন। সৎ বন্ধুরা আপনার সাফল্যে খুশি হয়, আপনার বিপদে পাশে থাকে এবং জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আপনাকে সমর্থন করে।
  • একজন সৎ মানুষ কখনো আপনার খারাপ কিছু কামনা করবে না।
  • তারা সব সময় আপনাকে সঠিক পথে চালিত করবে এবং আপনার সাফল্যে খুশি হবে।

2. স্বার্থহীন সম্পর্ক
  • স্বার্থহীন সম্পর্ক এমন একটি বন্ধুত্ব যেখানে কোনো লুকায়িত উদ্দেশ্য বা স্বার্থ নেই। এই ধরনের বন্ধুত্ব নিঃস্বার্থ এবং সত্যিকারের ভালোবাসার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।
  • স্বার্থহীন বন্ধুত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
  • নিঃস্বার্থ সমর্থন: তারা আপনাকে নিঃস্বার্থভাবে সমর্থন করে, আপনার ভালো-মন্দ সব অবস্থাতেই পাশে থাকে.
  • আন্তরিক ভালোবাসা: সম্পর্কের মধ্যে কোনো প্রকার স্বার্থ বা লোভ না থেকে শুধুমাত্র আন্তরিক ভালোবাসা থাকে.
  • সত্যিকারের সুখ: আপনার সাফল্যে তারা সত্যিকারের খুশি হয় এবং কখনোই ঈর্ষা করে না.
  • সহানুভূতি ও সহমর্মিতা: যখন আপনি বিপদে থাকেন, তখন তারা আপনার পাশে থেকে আপনাকে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রদান করে.
  • অবিচল আস্থা: তাদের প্রতি আপনার আস্থা অবিচল থাকে, কারণ আপনি জানেন যে তারা কখনো আপনার ক্ষতি করবে না.
  • স্বার্থহীন বন্ধুত্ব আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি আমাদের মানসিক শান্তি প্রদান করে এবং আমাদের জীবনের পথচলাকে সহজ ও সুন্দর করে তোলে।
  • স্বার্থের সম্পর্ক কখনো বন্ধুত্বপূর্ণ হতে পারে না।
  • আপনার বন্ধু নিঃস্বার্থভাবে আপনার পাশে আছে কিনা তা যাচাই করুন।

      3. গুরুত্ব দেওয়া বন্ধু

      • একজন ভালো বন্ধু আপনার যৌক্তিক ও অযৌক্তিক সব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।
      • এমন বন্ধু বাছাই করুন, যে আপনাকে গুরুত্ব দেয় এবং প্রাধান্য দেয়।

      4. বিশ্বাসের ভিত্তি

      • বিশ্বাসের ভিত্তি এমন একটি বন্ধুত্ব যেখানে সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক আস্থা এবং সততার ওপর। এই ধরনের বন্ধুত্বে দুই পক্ষের মধ্যে একটি গভীর বিশ্বাস ও সম্মান থাকে।
      • বিশ্বাসের ভিত্তিতে বন্ধুত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
      • বিশ্বাসযোগ্যতা: একজন প্রকৃত বন্ধু আপনার প্রতি বিশ্বাসযোগ্য হবে এবং আপনি তার উপর সম্পূর্ণ ভরসা করতে পারবেন. 
      • গোপনীয়তা রক্ষা: আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও গোপন কথা তারা নিজের মধ্যে আগলে রাখবে এবং কারো সাথে শেয়ার করবে না. 
      • সততা: বন্ধুরা সবসময় সৎ থাকবে এবং মিথ্যা বলবে না, যদিও সত্য কখনো কখনো কষ্টদায়ক হতে পারে. সহানুভূতি: একজন প্রকৃত বন্ধু আপনার অনুভূতি এবং মানসিক অবস্থাকে সম্মান করবে এবং আপনার পাশে থাকবে. 
      • সমর্থন: তারা সবসময় আপনার পাশে থাকবে, বিশেষ করে যখন আপনি সমস্যায় থাকেন বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয়. নির্ভরযোগ্যতা: একজন প্রকৃত বন্ধু সবসময় আপনার পাশে থাকবে এবং আপনি তার উপর নির্ভর করতে পারবেন.
      • বিশ্বাসের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব আমাদের জীবনের মান বৃদ্ধি করে এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে। এটি 
      • আমাদেরকে জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করে এবং সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন গঠনে সহায়তা করে।

      • বন্ধুত্বের ভিত্তি গড়ে ওঠে বিশ্বাসের মাধ্যমে।
      • এমন কাউকে বন্ধু হিসেবে বাছাই করুন, যার সঙ্গে পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

      5. বিপদে সহায়তা

      • বিপদে সহায়তা এমন একটি গুণ যা প্রকৃত বন্ধুত্বের একটি অপরিহার্য অংশ। বন্ধুরা একে অপরের পাশে থাকে, বিশেষ করে যখন একজন বন্ধু সমস্যায় বা বিপদে থাকে।

      • বিপদে সহায়তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:
      • সহানুভূতি: একজন প্রকৃত বন্ধু আপনার সমস্যার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করবে এবং আপনার কষ্টগুলো বুঝতে চেষ্টা করবে। তারা আপনার মনের অবস্থা বুঝবে এবং মানসিক সমর্থন প্রদান করবে.
      • পরামর্শ: বিপদে পড়লে সঠিক পরামর্শ পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃত বন্ধুরা আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে এবং সমস্যার সমাধানের জন্য বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ দেবে.
      • উপস্থিতি: বিপদে যখন আপনি একা থাকেন, তখন একজন প্রকৃত বন্ধুর শারীরিক উপস্থিতি আপনাকে মানসিকভাবে শক্তি যোগাবে। তারা আপনার পাশে থেকে আপনাকে সহায়তা করবে এবং বিপদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে.
      • আর্থিক সহায়তা: কখনও কখনও আর্থিক সমস্যা আমাদের জীবনে বড় বিপদ হয়ে দেখা দেয়। একজন প্রকৃত বন্ধু প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তা দিতে পিছুপা হবে না.
      • উৎসাহ: কঠিন সময়ে একজন প্রকৃত বন্ধু আপনাকে উৎসাহিত করবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলবে। তারা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনি এই কঠিন সময় পার করতে পারবেন.
      • নির্ভরযোগ্যতা: বিপদের সময়ে একজন প্রকৃত বন্ধুর উপর আপনি নির্ভর করতে পারবেন। তারা তাদের দায়িত্বকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করবে এবং আপনাকে সহায়তা করতে সবকিছু করবে।
      • বিপদে বন্ধুর পরিচয়।
      • এমন বন্ধু নির্বাচন করুন, যে আপনার ভালো-খারাপ উভয় সময়ই আপনার পাশে থাকে এবং মানসিকভাবে সহযোগিতা করে।

      বিপদে সহায়তা বন্ধুত্বের মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলে এবং সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও গভীর করে। প্রকৃত বন্ধুরা আমাদের জীবনে আশীর্বাদ স্বরূপ এবং বিপদে তাদের সহায়তা আমাদের জীবনের চলার পথকে অনেক সহজ ও সুন্দর করে তোলে।


      6. সীমা নির্ধারণ

      সীমা নির্ধারণ বন্ধুত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি এবং আপনার বন্ধুরা সম্পর্কের মধ্যে নির্দিষ্ট সীমারেখা তৈরি করেন, যা পরস্পরের সম্মান ও স্বতন্ত্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

      সীমা নির্ধারণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:

      • ব্যক্তিগত স্থান: প্রত্যেকেরই কিছু ব্যক্তিগত স্থান ও সময়ের প্রয়োজন। একজন প্রকৃত বন্ধু আপনার এই প্রয়োজনকে সম্মান করবে এবং আপনার ব্যক্তিগত স্থানের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করবে.
      • গোপনীয়তা: সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে আপনি আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারেন। বন্ধুত্বে গোপনীয়তার সীমা থাকা উচিত যাতে ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিরাপদ থাকে.
      • সম্মান: বন্ধুত্বে সম্মান অপরিহার্য। সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে আপনি এবং আপনার বন্ধু পরস্পরের সম্মান বজায় রাখতে পারেন। এটি সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা তৈরি করে.
      • স্বাধীনতা: সীমা নির্ধারণ আপনাকে আপনার স্বাধীনতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি নিশ্চিত করে যে বন্ধুত্বের মধ্যে কোনো পক্ষই অন্যের ওপর অযাচিত প্রভাব বিস্তার করছে না.
      • সঠিক যোগাযোগ: সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে সঠিক যোগাযোগ বজায় রাখা যায়। এটি আপনাকে এবং আপনার বন্ধুকে সহজেই বুঝতে সাহায্য করে কীভাবে এবং কখন যোগাযোগ করা উচিত.
      • আবেগের নিয়ন্ত্রণ: আবেগের সীমা নির্ধারণ আপনাকে এবং আপনার বন্ধুকে সম্পর্কের মধ্যে অতিরিক্ত আবেগের বহিঃপ্রকাশ থেকে রক্ষা করে। এটি সম্পর্ককে স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ রাখে.
      • সময় ব্যবস্থাপনা: সীমা নির্ধারণের মাধ্যমে আপনি এবং আপনার বন্ধু একে অপরের সময়ের মূল্য বুঝতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় সময় আলাদা রাখতে পারেন.
      • কিছু বন্ধু আপনার জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
      • এমন বন্ধু নির্বাচন করবেন না, যে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে অতিরিক্ত প্রভাব ফেলে।

      সীমা নির্ধারণ বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এটি আপনাকে এবং আপনার বন্ধুকে একটি সুস্থ ও সঠিক সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়তা করে, যেখানে পরস্পরের প্রতি সম্মান, স্বাধীনতা ও সমর্থন বজায় থাকে।


      7. উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধু

      একটি উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধু হলো এমন একজন বন্ধু যা আপনার জীবনে সুপারিশকারী, উৎসাহী, মনোনীত, আত্মবিশ্বাসী, এবং আপনার সফলতার উদ্বেগ হিসাবে আপনার পাশে রয়েছে।

      উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধুর কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:

      • উৎসাহ ও প্রেরণা: উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধুরা আপনাকে প্রেরণা এবং উৎসাহ দেয়। তারা আপনার সফলতা এবং উচ্চাকাঙ্খা বৃদ্ধি করে আপনার ক্ষমতা ও সাহস উত্তেজিত করে।

      • সহানুভূতি এবং সমর্থন: এই ধরনের বন্ধুরা আপনার কাজে সহানুভূতি ও সমর্থন প্রদান করে। তারা আপনার অবস্থার সম্পর্কে সততা এবং সমর্থন দেয় যাতে আপনি আগামীকালের জন্য নির্ধারিত হতে পারেন।

      • প্রশাসন এবং প্রেম: এই ধরনের বন্ধুরা আপনার প্রশাসন এবং প্রেম দেয়। তারা আপনাকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে আপনার উত্সাহ বাড়ানোর জন্য সহায়ক হতে প্রস্তুত।

      • পরামর্শ এবং সহায়তা: এই বন্ধুরা আপনাকে উচ্চ মান এবং উত্তেজনা দেয়। তারা আপনার কাজে সমস্যা ও দুর্দশার সময়ে সাহায্য করে।

      • প্রাথমিকতা এবং উপলব্ধিতা: উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধুরা সাধারণভাবে আপনার জন্য সময় ও সূযোগ প্রদান করেন। তারা সাধারণভাবে আপনার জন্য উপলব্ধ থাকে এবং আপনার সাথে উত্তরাধিকার পরিপ্রেক্ষিত করেন।

      • প্রেমিকতা ও সহিষ্ণুতা: উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধুরা আপনার প্রেমিক এবং সহিষ্ণুতা দেখানোর চেষ্টা করেন। তারা আপনার অসম্মানজনক স্থিতিতে আপনার পাশে থাকতে চান।

      • একজন প্রকৃত বন্ধু সবসময় আপনাকে উৎসাহিত করবে।

      • তারা আপনার কাজের প্রশংসা করবে এবং উৎসাহ যোগাবে।

      উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধু হচ্ছে ঐ বন্ধু যা আপনার জীবনে উৎসাহ এবং প্রেরণা সৃষ্টি করে এবং সমস্যা সম্মুখীন হলে আপনাকে সহানুভূতি এবং প্রাথমিকতা দেয়। এই ধরনের বন্ধু আপনার পাশে থাকে আরও উত্সাহী এবং নির্দিষ্ট কাজের জন্য আপনার ভালো স্বার্থ চিন্তা করে। উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধু সাধারণভাবে আপনার কাছে আপনার সাথে উদ্বুদ্ধ করে এবং আপনার উচ্চাকাঙ্খা বাড়ানোর জন্য অনুপ্রাণিত করে। এই ধরনের বন্ধুরা আপনার সাথে অবস্থান করে এবং সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। তাদের প্রতি আপনার ক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। উৎসাহ প্রদানকারী বন্ধু যদি আপনার কাছে আছেন, তারা আপনার জীবনের প্রতিটি পথে আপনার সাথে থাকবে এবং আপনার ভালো উপলব্ধিতে সাহায্য করবে। সাধারণভাবে, এই বন্ধুরা আপনার মানসিক সাহায্য করে এবং আপনাকে পরিপূর্ণভাবে উত্তেজনা দেয়। তাদের প্রতি আপনার আত্মীয়তা ও সম্মান থাকে।.


      8. মনোযোগী শ্রোতা

      • মনোযোগী শ্রোতা হলে তারা সাধারণভাবে অন্যদের কথা শুনতে সময় ও মনোযোগ দেয়। এই ধরনের শ্রোতারা অন্যের কথা মাথায় রেখে তাদের ভাবনা এবং প্রসঙ্গে গভীরভাবে আগ্রহ প্রদর্শন করে। তারা শ্রদ্ধাশীলভাবে বোঝার চেষ্টা করে এবং মন্দে কথা বলা বা বোঝার চেষ্টা করেন না। মনোযোগী শ্রোতারা সাধারণভাবে সম্পূর্ণরূপে আবার বলতে বা প্রতিক্রিয়া দেয়ার আগে অন্যের বক্তব্য বুঝতে চেষ্টা করে। তারা সাধারণভাবে ভালো শ্রেণির বন্ধু হতে ভালোবাসেন এবং তাদের সাহায্যের জন্য সততা দেখানো এবং সম্মান দেয়া উচিত। এই ধরনের শ্রোতারা অন্যদের প্রসঙ্গে বিনয়ী এবং সহানুভূতিশীল হওয়ার চেষ্টা করে এবং অন্যদের ভাবনাগুলির গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করে। সাধারণভাবে, মনোযোগী শ্রোতারা অন্যদের ভালোভাবে শুনতে প্রস্তুত থাকেন এবং তাদের কথাগুলির গুরুত্ব বুঝতে চেষ্টা করেন। এই ধরণের শ্রোতারা বিশেষভাবে সাহায্যের প্রস্তুতি করে এবং অন্যের মতামতে মন্নুত্রিত হয়ে থাকেন।
      • একজন প্রকৃত বন্ধু আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে।
      • যদি আপনার বন্ধু আপনার সমস্যার কথা শুনতে না চায়, তবে সে প্রকৃত বন্ধু নয়।

      9. মন খুলে সব বলার সাথী

      • "মন খুলে সব বলার সাথী" হওয়া মানে আপনার মনের বিষয়গুলি যেন সবার সামনে একটা খোলা পুস্তিকা হয়ে উঠে, তা মানে এটি একটি খুলে দিককের মনোভাব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা গোপন করা কিছু নেই। যারা এই ধরণের সঙ্গে সম্পর্কিত তারা আপনাকে আপনার ভাবনা, সংকল্প, সমস্যা, চার্ট, কিংবা যেকোনো ব্যক্তিগত বিষয়ে নিজেদের সংকল্পনা, সমাধান, পরামর্শ, ইত্যাদি সব বলতে দেওয়া। এটি দিয়ে একটি ব্যক্তি আপনার সম্পর্কে আরও কিছু বুঝতে পারে এবং সম্পর্ক পালনে এক ধরনের ভিন্নতা আনে যা প্রতিটি সম্পর্কে জরুরী। যেহেতু এটি একটি খোলা মনোভাব নিয়ে যাতে পারেন সেহেতু প্রতিটি ব্যক্তি এই ধরনের সম্পর্ক বিনা কোনো পর্যায়ে নিতে পারেন। এটি সত্যিই ভালো এবং সুন্দর একটি সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
      • একজন ভালো বন্ধু আপনার সব কথা শুনবে এবং মনের অবস্থা বুঝতে পারবে।
      • তারা আপনাকে মিথ্যা প্রশংসা করবে না এবং অনুযোগ সরাসরি আপনাকে জানাবে।
      10. সৎ বন্ধু
      • একজন সৎ বন্ধু হলো এমন একজন বন্ধু যার সঙ্গে আপনি নিঃস্বার্থিকভাবে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারেন। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন আপনি কারোর সাথে বিপরীত মতামত রাখেন কিন্তু একটি সৎ বন্ধু তাদের সাথে সম্পর্ক সংরক্ষণ করে যেন কোনো দ্বন্দ্ব উত্থান না করে। এর মাধ্যমে আপনি পরিষ্কার বন্ধুত্বের ভাবনা রক্ষা করতে পারেন এবং সৎ বন্ধু সংক্রান্ত যে কোনও কঠিন অবস্থা সম্মুখীন হলে তাদের সাথে একত্রে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। সৎ বন্ধুরা সাধারণত আপনার কাছে প্রামাণ্যভাবে থাকে এবং আপনার সাথে উদার এবং আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। তাদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং এক অপরের প্রতি সমর্থন প্রদান করা একটি সৎ বন্ধুত্বের গুরুত্বপূর্ণ দিক। সৎ বন্ধুরা আপনার সাথে অবস্থান করে এবং সাধারণত তারা আপনাকে নিশ্চিত করতে চান যে তারা আপনার সঙ্গে কোনো ধরনের ক্ষতি বা অসুবিধা সৃষ্টি করবে না।
      • বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার উপায় হলো সততা।
      • যদি আপনার বন্ধু সৎ থাকে তবে সেটি একটি ভালো লক্ষণ।

      উপসংহার

      জীবনের চলার পথে আমাদের অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হতে হয় এবং তাদের মধ্যে কিছু মানুষ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়। বন্ধুত্বের সম্পর্ক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর নির্বাচন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে করতে হয়। একজন ভালো বন্ধু যেমন আমাদের জীবনকে সাফল্যময় করতে পারে, তেমনি খারাপ বন্ধুর সঙ্গ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করতে পারে। তাই বন্ধুত্ব নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং এমন বন্ধু বাছাই করা উচিত, যারা আমাদের সৎ, বিশ্বাসযোগ্য এবং সবসময় পাশে থাকে।

      গবেষণা সমীক্ষার লেখক ডঃ রাজাউল করিম

      Dʀ. Rᴀᴢᴀᴜʟ Kᴀʀɪᴍ ɪs ᴛʜᴇ ᴀᴜᴛʜᴏʀ ᴏғ ᴛʜɪs ʀᴇsᴇᴀʀᴄʜ sᴛᴜᴅʏ.

      #বুদ্ধিরবাতিঘর #শিক্ষা #জ্ঞান #শেখা #ফেসবুকপেইজ

      একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

      0 মন্তব্যসমূহ